এবারের কোরবানি ঈদের পশুর নামকরণ করা হয়েছে নেইমার, মেসি, এমবাপ্পে, ডি মারিয়া ও পাঠানের মত বিশ্বমানের খেলোয়াড় ও সিনেমার হিরোদের নামে। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ২ নং ঢাকেশ্বরী এলাকার আর কে এগ্রো ফার্ম লিমিটেড দুই থেকে তিন বছর আগে থেকেই নিজস্ব গাভীর বাছুরগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করছে। এর মধ্যে নেইমার ও মেসি ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।
খামারের ৫০ ভাগ গরু বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের ২-১ দিন আগে ১০০ ভাগ বিক্রি হবে বলে জানান খামারিরা। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, সাড়ে তিন হাজার খামার ও হাটের পশুসহ এবার এক লাখ গবাদি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, যা চৌদ্দশ কোটি টাকা বিক্রি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের খামারগুলোতে জমজমাট গরু বেচাকেনা চলছে। তাই প্রতিদিন ভিড় করছে হাজার হাজার ক্রেতা দর্শনার্থীরা। বছরজুড়ে খামারগুলোতে প্রাকৃতিক উপায়ে দানাদার খাবার খাইয়ে গরুকে মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও আর কে এগ্রো ফার্মে গরুকে ভালোবেসে নামকরণ করা হয়েছে নেইমার, মেসি, এমবাপ্পে, ডি মারিয়া ও ফিল্ম সুপারস্টার পাঠান।
এছাড়া, ঢাকা ক্যাটেল এক্সপোতে গরু প্রদর্শনীতে প্রথম বিজয়ী হওয়া ১১০০ কেজি ওজনের আমেরিকান লাল ব্রাহামাটি ২০২৪ সালে বিক্রি করবে ৫০ লাখ টাকায়। ৮০০ কেজি ওজনের কালো আমেরিকান ডেক্সটার বিক্রি হয়েছে ১৫ লাখ টাকায়। গরুকে বর সাজিয়ে করা হচ্ছে ফ্যাশন শো। বর্ণিল সাজে, সেজেছে প্রতিটি খামার।
আর কে এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোহাম্মদ আব্দুস সামাদ ও মোহাম্মদ নাজির হোসেন বলেন, ‘বিদেশ থেকে গরু আমদানি ছাড়া দেশের নিজস্ব গাভীর বাছুর থেকে প্রতিবারের মতো এবারও প্রাকৃতিক উপায়ে খর, ভুসি ও কাঁচা ঘাস খাইয়ে গরু মোটা করা হয়েছে। দেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরকে ফুটিয়ে তুলতে গরুকে ভালবেসে বিশ্বমানের নামকরণ ছাড়া নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮০ হাজার থেকে ৩০ লাখ টাকায় গরু, মহিষ।
২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ছাগল, দুম্বা ও ভেড়া পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে ৫০ ভাগ কোরবানির পশু বুকিং হয়েছে। ঈদের দু-একদিন আগে ক্রেতাতের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হবে। এ ছাড়া, ভালোবেসে গরুকে খেলোয়াড় ও ফিল্মস্টার নামকরণ করা গরুর মধ্যে নেইমার ও মেসি ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। ক্রেতা দর্শনার্থীদের জন্য ফার্মে এসে বসার জায়গা সাজসজ্জা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে যা ঈদের বাড়তি উৎসব এখানে পাওয়া যায়।’
এদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ বাসনা আক্তার বলেন, ‘গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ করার জন্য প্রতিবছরের মতো খামারিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। এ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলায় রেজিস্টারভুক্ত সাড়ে তিন হাজার খামার ও হাট, বাজারসহ এক লাখ কোরবানির গবাদি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা চৌদ্দশ কোটি টাকা বেচাকেনা হবে বলে মনে করেন।’
এ সময় কৃষিবিদ বাসনা আক্তার আরও বলেন, ‘খামারগুলো মাংস উৎপাদনে প্রাণিসম্পদ সেক্টরে বড় অবদান রাখছে। তবে, গরুর মাংসের দাম দিনে দিনে বাড়ছে যেমন, তেমনি গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। গো-খাদ্যের দাম কমে এলে গরুর মাংসের দামও কমে আসবে।’